আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ও করণীয়
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ও করণীয়
-- মোঃ আজহারুল ইসলাম (জুয়েল)
Published in newspaper:
1. https://drive.google.com/file/d/13dipqSq2zEFo0vrRnRsoocgQZU4KNlKp/view?usp=drive_link
2. https://www.dainikshiksha.com
---------এই মুহুর্তে ঠিক এমন একটা সময় মনে পড়ছে যখন ১৯৮২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষার্থী হিসাবে নিজ গ্রামের/পাড়ার একজন অসাক্ষর/নিরক্ষর ব্যক্তিকে অ আ ক খ থেকে সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তুলে নিজের নাম ঠিকানাসহ কিছু লিখতে ও পড়তে পারা অবস্থায় নিজ খরচে কলেজ পরীক্ষা কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করা যার জন্য কোন মার্ক বা নম্বর ছিল না কিন্তু আত্মতৃপ্তি ছিল যা আজো স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। একজন মাধ্যমিক শিক্ষক হিসাবে যদিও সাক্ষরজ্ঞান শেখাতে হয় না তবে একটা উপলব্ধি কাজ করে এবং সেটা হচ্ছে সাক্ষরতার সংগা কিন্তু শুধু সাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন করে তোলা নয় অথবা শুধু লিখতে পড়তে পারা নয় বরং ব্যপক অর্থে আর্থসামাজিকভাবে রাজনৈতিকভাবে মনস্তাত্ত্বিকভাবে রাষ্ট্রের উপযুক্ত করে গড়ে তোলাও কিন্তু সাক্ষরতার অন্যতম লক্ষ্য। প্রতি বছর সারা বিশ্বে ইউনেস্কোর অধীন আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। বাংলাদেশ তারই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলছে বিধায় নাগরিক হিসাবে প্রতিটি মানুষের কিছু না কিছু কর্তব্য থেকেই যায় এই দিনটিকে সত্যিকার অর্থেই জনগণের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার। সেক্ষেত্রে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আমাদের এই জনগোষ্ঠীকে সত্যিকারের মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে ধর্মীয় সামাজিক রাজনৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা এখন সময়ের দাবী। নেট জগতের এই বিশ্বায়নের যুগে একজন দক্ষ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন বিশ্ব নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলে জাতি নিয়ে যেতে হবে বিশ্বপ্রতিযোগিতার দৌড়ে টিকে থাকার আর সেটা হতে পারে বাংলাদেশের কোন অজপাড়াগাঁয়ের কোন নিভৃত পল্লীর সূযোগ সুবিধা বঞ্চিত সেই ছোট্ট শিশুটি থেকে রাজধানীর ছোয়ায় গড়ে উঠা বিলাসবহুল জীবন যাপন করা ব্যক্তি পর্যন্ত কারণ ঐ যে বিলাসবাহুল্যে লালিত সেই ব্যক্তিটিরও হয়তো কোন এক সাক্ষরতার অভাব থাকতে পারে যার জন্য হয়তো দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাধার সম্মুখীন হতে হয় প্রতিনিয়তই। একটা কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় একদিকে যেমন সাক্ষরতার ছোয়া থেকে বঞ্চিত যে মানুষটি তার ভিতরে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দেয়া ঠিক তদ্রূপ প্রতিটি নাগরিক তথা কৃষক দিনমজুর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের নাগরিকদের ডিজিটাল সাক্ষরতা জ্ঞান প্রসারে রাষ্ট্রীয়ভাবে সামাজিকভাবে এমন কি ব্যক্তিগতভাবে অথবা সম্মিলিতভাবে করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এখানে উল্ল্যেখ করা যেতে পারে আন্তর্জাতিক অংগনে স্বনামধন্য বিশ্ব নাগরিক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ও বিশ্বের গর্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের গ্রামীনব্যাংকের ক্ষুদ্রঋন প্রকল্পের কথা যখন দেখেছি মাত্র একজন অসহায় হতদরিদ্র নারীকে ঋন দিয়ে তাঁর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হতে এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে পরেছে বিশ্বের অনেক দেশে ঠিক সেভাবেই অর্থনৈতিক সামাজিক ডিজিটাল সাক্ষরতাসহ মানবীয় গুণাবলীসম্পন্ন সত্যিকার অর্থেই একজন মনুষ্যত্ববোধ জ্ঞান সাক্ষরতাসম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে সাক্ষরতার অর্থ যেখানে এখন ব্যপক সেখানে সাক্ষরতা সার্বিক জ্ঞান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বস্তরের নাগরিকদের মাঝে জনসচেতনতামূলক প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে জাগিয়ে তুলতে হবে। সর্বোপরি সাক্ষরতা বিষয়ে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত নীতিমালা লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং যা এখানে উল্লেখযোগ্য এবং হুবহু তুলে ধরা হলোঃ
‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হলো ইউনেস্কো-ঘোষিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস। ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ১৪তম অধিবেশনে ৮ সেপ্টেম্বর তারিখকে “আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৬৭ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি উদ্যাপিত হয়। দিবসটির লক্ষ্য ব্যক্তি, সম্প্রদায় এবং সমাজের কাছে সাক্ষরতার গুরুত্ব তুলে ধরা। বর্তমানে জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এই দিবসটি উদ্যাপন করে থাকে।’
তাই তো বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকসহ পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী থেকে শুরু করে বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত নাগরিকগনের সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার মানসে গড়ে তুলতে হবে এবং সেই সাথে পেশাভিত্তিক ও ডিজিটাল সাক্ষরতা জ্ঞান পরিধি বাড়িয়ে রাষ্ট্রের তথা বিশ্বের চাহিদামাফিক গড়ে তোলার সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবী।
আজহারুল ইসলাম জুয়েল
সিনিয়র শিক্ষক (ইংরেজি)
ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার কলেজিয়েট ইন্সটিটিউট পঞ্চগড়
ফোনঃ ০১৭১৬৮৪৯৮৪৮
ইমেইলঃ azharul1965@gmail.com
হোয়াটসঅ্যাপঃ ০১৭০১৯৮০১৮১
Comments
Post a Comment